দখিনের খবর ডেস্ক ॥ গতকাল বাংলাদেশে বজ্রপাতে মারা গেছেন ২৯জন। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি বজ্রপাতের ঘটনায় মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সম্প্রতি ঢাকায় বজ্রপাতের কারণে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে তিনজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এমন প্রেক্ষাপটে রোববার বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বজ্রপাতে মৃত্যু বা হতাহত হবার ঘটনা এড়াতে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। গত রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক মোহাম্মদ রোবেদ আমিন বলেছেন, “বজ্রপাত একটি আকস্মিক ঘটনা, যা প্রতিরোধ করা অত্যন্ত কঠিন। এবং যদি (বজ্রপাত) হয়ে যায় তাহলে অনেকের মৃত্যু হতে পারে।” তিনি বলেছেন, “খেয়াল রাখতে হবে বাংলাদেশে সাধারণত এপ্রিল থেকে মে মাসে সর্বোচ্চ হলে জুন মাস পর্যন্ত বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। তাহলে বর্তমান সময়ে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটতে পারে।” মৃত্যু ও হতাহত হওয়া এড়াতে কিছু সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশনা দেন অধ্যাপক আমিন। * বজ্রঝড় সাধারণত ত্রিশ থেকে পঁয়ত্রিশ মিনিট স্থায়ী হয়। এ সময়টুকু ঘরে অবস্থান করুন। অতি জরুরি প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যেতে হলে রাবারের জুতা পরে বাইরে যাবেন, এটি বজ্রঝড় বা বজ্রপাত থেকে সুরক্ষা দেবে। * বজ্রপাতের সময় ধানক্ষেত বা খোলামাঠে যদি থাকেন তাহলে পায়ের আঙুলের ওপর ভর দিয়ে এবং কানে আঙুল দিয়ে নিচু হয়ে বসে পড়তে হবে। * বজ্রপাতের আশংকা দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব দালান বা কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিতে হবে। ভবনের ছাদে বা উঁচু ভূমিতে যাওয়া উচিত হবে না। * বজ্রপাতের সময় যে কোন ধরণের খেলাধুলা থেকে শিশুকে বিরত রাখতে হবে, ঘরের ভেতরে অবস্থান করতে হবে। * খালি জায়গায় যদি উঁচু গাছপালা, বৈদ্যুতিক খুঁটি, ধাতব পদার্থ বা মোবাইল টাওয়ার থাকে, তার কাছাকাছি থাকবেন না। বজ্রপাতের সময় গাছের নিচে থাকা বিপজ্জনক। * বজ্রপাতের সময় ছাউনিবিহীন নৌকায় মাছ ধরতে না যাওয়াই উচিৎ হবে। সমুদ্রে বা নদীতে থাকলে মাছ ধরা বন্ধ রেখে নৌকার ছাউনির নিচে আশ্রয় নিতে হবে। * যদি কেউ গাড়ির ভেতর অবস্থান করেন, তাহলে গাড়ির ধাতব অংশের সাথে শরীরের সংযোগ রাখা যাবে না। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতিবছর বজ্রপাতে দেড়’শোর মত মানুষ মারা যান। বেশিরভাগ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে হাওর অঞ্চলে। মানুষ ছাড়াও বজ্রপাতে প্রচুর গবাদি পশুও মারা যায়। মৃত্যুর সংখ্যা বিচার করে বাংলাদেশের সরকার বজ্রপাতকে জাতীয় দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
Leave a Reply